Thursday, October 16, 2025
HomeScrollইংরেজ সাহেবের হাতেই শুরু কালচিনির হ্যামিল্টনগঞ্জের কালীপুজোর
Hamiltonganj

ইংরেজ সাহেবের হাতেই শুরু কালচিনির হ্যামিল্টনগঞ্জের কালীপুজোর

চলতি বছর এই পুজো ১০৮তম বর্ষে

আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলা তথা ডুয়ার্সের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী কালিপুজো হল হ্যামিল্টনগঞ্জের (Hamiltonganj) কালিপুজো। চলতিবছর এই পুজো ১০৮ তম বর্ষে। জানা গিয়েছে, ব্রিটিশ আমলে চা বাগানের ইউরোপীয়ন সাহেবরা শুরু করে ছিল এই পুজো। উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এই এলাকায় একের পর এক চা বাগান তৈরি করেছিল ইউরোপীয়ন সাহেবরা এবং ঐ সময় চা বাগানে কাজ করার সময় ছোটোনাগপুর, রাঁচি সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আনা হয়েছিল শ্রমিক। পুজোর সময় ছুটিতে অনেকে তাদের নিজের বাড়িতে চলে যেত এবং ফিরে আসতোনা আর এর ফলে বাগানে শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিত। চা শ্রমিকরা যাতে নিজের বাড়িতে না চলে যায় সেজন‍্য হ‍্যামিল্টণগঞ্জে কালিপুজো চালু করেন। এবং পরবর্তীতে এই কালিপুজোকে কেন্দ্র করে মেলার আয়োজন করেন ইউরোপীয়ন সাহেবরা। এই থেকেই শুরু হয় এই বিখ্যাত পুজো।

প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও জাকজমকপূর্ণভাবে আয়োজন করা হচ্ছে পুজোর। পুজো কমিটির সদস্যরা জানান, ১৯১৭ সালে ইউরোপিয়ান সহেবদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এই পুজো। এরজন্য একটি কাঠের তৈরি মন্দির ও মাটির প্রতিমা স্থাপন করেছিলেন তারা। স্বাধীনতার পর স্থানীয় মানুষেরা প্রতিবছর এই পুজো করে আসছেন। পরবর্তীতে আশেপাশের চা বলয়ের শ্রমিক ও জনগণের সহায়তায় পাকা মন্দির ও ২০০২ সালে পাথরের মূর্তি স্থাপন করা হয়। কালিপুজোর দিনে আলিপুরদুয়ার জেলা ছাড়াও আশেপাশের একাধিক জেলা থেকে দর্শনার্থীরা মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। ‘ পুজো কমিটির সদস্যরা  জানান, ‘১৯১৭ সালে যে রীতিতে পুজো হত সেই রীতি মেনেই আমরা পুজো করে আসছি। তরাই ও ডুয়ার্সের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থীরা কালি পুজোর সময় মন্দিরে আসেন।

Kali Pujo 2018: Hamiltonganj puja turns 102 years

আরও পড়ুন: প্লাস্টারের ভুল বাঁধনে হাত অকেজো শিশুর! দেখুন কী অবস্থা

অন্যদিকে,  এই কালি পুজোকে কেন্দ্র করে হ্যামিল্টনগঞ্জের একাধিক এলাকা জুড়ে আয়জন করা হয় বিশাল মেলারও। এবছর হ‍্যামিল্টণগঞ্জ কালিপুজোর মেলা ৯০ তম বর্ষ । ইউরোপীয়ন সাহেবরাই এই মেলার আয়োজন করে ছিলেন। ১৩ দিন ধরে এই মেলা চলবে বলে মেলা কমিটির তরফে জানানো হয়েছে। দুর্গা পুজো ও কালি পুজোর পর হ্যামিল্টনগঞ্জের এই মেলা বাসিন্দাদের জন্য কোনো উৎসবের চেয়ে কম নয়। সারা বছর এলাকার মানুষেরা যেখানেই থাকুক না কেন, এই মেলার সময় প্রায় সকলেই বাড়িতে ফেরেন। নানান ভাষাভাষীর মানুষের মেল বন্ধনের উৎস এই হ্যামিল্টনগঞ্জ কালিপুজোর মেলা। এই মেলা হ্যামিল্টনগঞ্জ বাসী ও চা শ্রমিকদের জন্য মনোরঞ্জনের অন্যতম রসদ।

Hamiltonganj kali puja Mela: সাহেবদের শুরু করা কালীপুজো ও মেলা আজও

মূলত ৯০ বছর আগে চা শ্রমিকদের মনোরঞ্জনের অন্যতম উৎস হিসেবে এই মেলার আয়জন করা হয় বলে মেলা কমিটির তরফে জানানো হয়। যেখানে বিভিন্ন রাজ্য ও প্রতিবেশী দেশ ভুটান ও নেপাল থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে দোকান দিতে আসেন। মেলা কমিটির সম্পাদক পরিমল সরকার ও সুকমল ঘোষ জানান, ‘ আগেকার দিনে মানুষের মনোরঞ্জনের অন্যতম উৎস ছিল এই মেলা। ইউরোপিয়ানদের হাতে মেলা শুরু হলেও আমরা সেই ঐতিহ্যকে এখনও ধরে রেখেছি। রকমারি দোকান, নাগরদোলার পাশাপাশি বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে সার্কাস। এছাড়া কিছু নতুনত্ব করারও প্রয়াস রয়েছে আমাদের।’

দেখুন খবর:

Read More

Latest News